সাবসিডিয়ারির অধীনে দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করবে বার্জার পেইন্টস

0

সাবসিডিয়ারি কোম্পানি জনসন অ্যান্ড নিকলসন (বাংলাদেশ) লিমিটেডের অধীনে দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক রং উৎপাদক বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। বার্জারের সাভারের কারখানার কাছেই নতুন ইউনিটটি স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৯১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এদিকে কভিড-১৯-এর প্রভাব কাটিয়ে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যবসা ও মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে বার্জার পেইন্টসের।

গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বার্জার পেইন্টস শেয়ারহোল্ডারদের জানিয়েছে, কোম্পানিটির পর্ষদ সাভারে সাবসিডিয়ারির দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করবে। ২০২২ সালের মধ্যে ইউনিটটি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে। দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, এ সময়ে কোম্পানিটির ৪০০ কোটি টাকা বিক্রি হয়েছে। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৩৬৩ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বিক্রি বেড়েছে ১০ শতাংশ। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৬৪ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ৪০ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৩ টাকা ৭১ পয়সা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৮ টাকা ৬৯ পয়সা।

এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে প্রথমার্ধে বার্জার পেইন্টসের বিক্রি হয়েছে ৬০৪ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে যেখানে বিক্রি হয়েছিল ৭৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে ১৯ শতাংশ। মূলত কভিড-১৯-এর প্রভাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির ব্যবসায় ধস নামার কারণে প্রথমার্ধে ঋণাত্মক বিক্রয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ৯০ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ১৬ শতাংশ। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ২০ পয়সা। এর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৯ টাকা ৩৩ পয়সা।

ব্যবসা সম্প্রসারণ ও প্রথমার্ধের আর্থিক ফলাফলের বিষয়ে জানতে চাইলে বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, সাবসিডিয়ারি কোম্পানি জনসন অ্যান্ড নিকলসন (বাংলাদেশ) লিমিটেডের চট্টগ্রামের কারখানায় টিনের কনটেইনার উৎপাদনের পাশাপাশি টিনের শিট রং করা হয়। এবার আমরা সাভারে বার্জারের মূল কারখানার কাছেই সাবসিডিয়ারি কোম্পানিটির দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করব। নেসলের নতুন শিশুখাদ্যের জন্য প্রয়োজনীয় কনটেইনার এখানে উৎপাদন করা হবে। নেসলের বাইরেও অন্যান্য কোম্পানি আমাদের কনটেইনার ব্যবহার করতে পারবে। পুরোপুরি অটোমেটেড পদ্ধতিতে নতুন ইউনিটে কনটেইনার তৈরি করা হবে। কভিড-১৯-এর কারণে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমাদের ব্যবসা ভালো হয়নি। দ্বিতীয় প্রান্তিকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছি। গত বছর অনেকেই নিজেদের বাসাবাড়ি পুনরায় রং করার জন্য আমাদের পণ্য ব্যবহার করেছে। এতে গতবার এ সময়ে ব্যবসা ভালো ছিল। কিন্তু এবার ক্রেতারা একান্ত প্রয়োজন না হলে বাসাবাড়ি রং করছে না। ফলে এ খাতে আমাদের ব্যবসা অনেকটাই কমেছে।

৩১ মার্চ সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২৯৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বার্জার পেইন্টস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ৫২ টাকা ২২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪৪ টাকা ২৭ পয়সা। ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল বার্জার পেইন্টস। তার আগের হিসাব বছরে ২০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।

২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বার্জার পেইন্টসের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৯০০ কোটি ৬৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৯৫ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২ দশমিক ৬৭, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হাতে দশমিক ৯৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল শেয়ারটির সর্বশেষ দর ছিল ১ হাজার ৩৬০ টাকা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১ হাজার ২০৮ টাকা থেকে ১ হাজার ৫১৯ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।

উত্তর দিন