একনেকে প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের সড়কের জন্য মাস্টার প্ল্যান করতে হবে

দক্ষিণাঞ্চলের সব সড়কের জন্য মাস্টার প্ল্যান করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সভাশেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, অনুশাসন ও প্রকল্পের তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দক্ষিণাঞ্চলের সব সড়কের জন্য মাস্টার প্ল্যান করতে হবে। পদ্মা সেতু হলে এ অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যক্রমে একটা নতুন গতিশীলতা তৈরি হবে।

প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে ড. শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরাসরি জানতে চেয়েছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন দেরি হওয়ার কারণ কী? বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেন। সব প্রকল্পে এ রকম দেরি হয় কেন? এটা ছোট টাকার প্রকল্প, এটা তো এতদিন লাগার কথা নয়। যখন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা তখন আরো দুই বছর মেয়াদ বাড়াচ্ছেন কেন? এটা নিয়ে পর্যালোচনা করুন। প্রকল্প পরিচালকদের ডাকুন। সব প্রকল্প যেন যথাসময়ে শেষ হয় সেই ব্যবস্থা নিন। কেন বিলম্ব্ব হচ্ছে সেটার কারণ অনুসন্ধান করুন।

গতকালের একনেক বৈঠকে প্রায় ৩ হাজার ৯০৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়সংবলিত চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৫২৪ কোটি ১০ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

গতকালের একনেক সভায় কৃষি মন্ত্রণালয় ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য এবং যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। এছাড়া ব্যয় বাড়িয়ে ৬৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার প্রকল্প ১০৯ কোটি ৯১ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে মুন্সীগঞ্জের সঙ্গে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২ হাজার ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘পঞ্চবটী থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্প, ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সড়ক উন্নয়ন ও ড্রেনেজ নেটওয়ার্কসহ নাগরিক সেবা উন্নতকরণ’ প্রকল্প।

চরখালী-তুষখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ (জেড-৮৭০১) প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে ড. শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখানেও বলেছেন ২০১৭ সালে এক বছরের জন্য প্রকল্প নিলেন, এ প্রকল্প এতদিন লাগা উচিত হয়নি। এটা তো পুরনো সড়ক ছিল। এত দীর্ঘ সময় কেন লাগল? এখন ২০২১ সাল পর্যন্ত নিয়েছেন, এটাই শেষ। এরপর আর বাড়াতে পারব না। যখন যে প্রকল্প হবে, তা যথাসময়ে শেষ করবেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যথেষ্ট জোরের সঙ্গে এ কথা বলেছেন বলে জানান ড. আলম।’

দক্ষিণাঞ্চলের সব সড়কের মাস্টার প্ল্যান করার নির্দেশনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, কী কী রাস্তাঘাট আছে, সেগুলোতে অনেক ভারী যানবাহন যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অ্যাভারেজ ডেইলি ট্রাফিক অনেক বেড়ে যাবে। এজন্য এখন থেকেই পুনর্গঠনের, পুনর্নির্মাণের ও শক্তিশালী করার কাজ শুরু করতে হবে।